রাউজানের ইমরান সিদ্দিকীর চুলু ফার ইস্ট জয়
নেপালের ১৯ হাজার ৮৮০ ফুট (৬ হাজার ৫৯ মিটার) উচ্চতার চুলু ফার ইস্ট পর্বতের চূড়া জয় করেছেন বাংলাদেশের রাউজানের পর্বতারোহী ইমরান উদ্দিন সিদ্দিকী। স্থানীয় সময় ৯ নভেম্বর সকাল ৮টায় অন্নপূর্ণা রিজিয়নের এই পর্বতের চূড়ায় লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে দেন তিনি।ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স পর্বতারোহণ ক্লাবের আয়োজনে পরিচালিত অভিযানে ইমরানের সঙ্গী ছিলেন জুনায়েদ সাইফ রুম্মান। তারা ওইদিন ভোররাতে (রাত ২টার দিকে) ৫ হাজার ৩০০ মিটার উচ্চতার হাই ক্যাম্প থেকে চূড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। তবে আগের সপ্তাহের ভারী তুষারপাতের কারণে পথ হয়ে ওঠে অত্যন্ত দুর্গম।অতিরিক্ত তুষারে সাইফের গতি মন্থর হয়ে পড়লে তাঁর ক্লাইম্বিং গাইড নিরাপত্তার স্বার্থে নেমে আসার পরামর্শ দেন। শেষ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতা থেকে সাইফকে ফিরে আসতে হয়। অন্যদিকে, একা অভিযান চালিয়ে যান রাউজানের ইমরান এবং সকাল ৮টায় সফলভাবে শিখরে পৌঁছান তিনি। সেদিনই তিনি বেসক্যাম্পে ফিরে আসেন।৬ হাজার ৫৯ মিটার উচ্চতার চুলু ফার ইস্ট অভিযানে যোগ দিতে ইমরান ও সাইফ গত ৩১ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কাঠমান্ডু থেকে বেসিশহর ও সেখান থেকে নাওয়াল গ্রাম পর্যন্ত যাত্রা শেষে তারা দুদিনের ট্রেক শেষে বেসক্যাম্পে পৌঁছান। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে হাই ক্যাম্প অতিক্রম করে শিখরের পথে এগিয়ে যান।এটি ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স ক্লাবের দ্বিতীয় অভিযান। এর আগে ২০২৩ সালে একই পর্বতের শিখর স্পর্শ করেছিলেন পর্বতারোহী বাবর আলী।চুলু ফার ইস্ট ইমরানের দ্বিতীয় ছয় হাজার মিটারের অভিযান। গত বছর তিনি ৬ হাজার ৪৬১ মিটার উচ্চতার মেরা সেন্ট্রাল পর্বতের চূড়া স্পর্শ করেন। অন্যদিকে, এটি সাইফের প্রথম ছয় হাজার মিটার উচ্চতার অভিযান। আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুই পর্বতারোহী ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এয়াছিন্নগর গ্রামের সন্তান ইমরান উদ্দিন সিদ্দিকী প্রয়াত ব্যাংকার ফিরোজ মিয়ার বড় ছেলে। তিনি ২০১০ সালে এসএসসি ও ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ীও।ইমরানের চাচা হযরত এয়াছিন শাহ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফরিদ মিয়া বলেন, “নেপালে যাত্রার পর থেকেই আমরা আল্লাহর রহমতে ভালো কোনো খবরের আশায় ছিলাম। আজ সে খবর সত্য হয়েছে।”ইমরানের ভাই তরুণ লেখক ও প্রাবন্ধিক রায়হান উদ্দিন সিদ্দিকী বলেন, “২০১৫ সালের নভেম্বরে আমাদের বাবা মারা যান। আজ যদি তিনি বেঁচে থাকতেন, অনেক খুশি হতেন। মায়ের আনন্দের সীমা নেই। তার এ অর্জনে আমাদের পুরো পরিবার ও এলাকার মানুষ আনন্দে উচ্ছ্বসিত।”