রোববার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
The Dhaka News Bangla

জালিয়াতিতেই উত্থান অ্যালকেমের আবুল হাসনাতের

বাংলাদেশের ব্যাংক লুটেরার সদস্য, পতিত আওয়ামী লীগের সহযোগী মো: আবুল হাসনাত। তিনি ভূইফোঁড় প্রতিষ্ঠানের নামে অগ্রণী ব্যাংক দৌলতপুর শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এই ভদ্রলোকের মুখোশ পরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে নানারকম জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ব্যবসার আড়ালে নানারকম অবৈধ কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। মাঝে মাঝে তরুণীদের নিয়ে ইউরোপ সফর করেন, এবং তার পছন্দের দেশ সুইজারল্যান্ড। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাঁচামাল সরবরাহের ব্যবসার পাশাপাশি তার গোপন রহস্যময় ব্যবসাও রয়েছে।ইতালি-জার্মানির তৈরি পণ্যের কথা বলা হলেও আসলে তা নয়। চাইনিজ পণ্যের গায়ে লেবেল বা স্টিকার থাকে জার্মানি, ইতালি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের। প্রতারণার বিভিন্ন মুখোশ পরে থাকা ধান্ধাবাজ আবুল হাসনাত ধরা পড়ার বাইরে রয়েছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যবসা করলেও তিনি নানা কৌশলে কর ফাঁকি দিচ্ছেন। আবুল হাসনাত বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নানা ব্যবসার সাথে জড়িত বলে সমাজে প্রচারিত হলেও, আসলে তার সব কাজই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসৎ।খোঁজ নিয়ে প্রথমে যা জানা গেল আবুল হাসনাত অস্তিত্বহীন একটি ভূইফোঁড় একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘অ্যালকেম আ্যাগ্রো এন্ড লাইভস্টোক লিমিটেড,এইচ এম এন্টারপ্রাইজ এবং হেক্সা সলিউশনস’-এর নামে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি দৌলতপুরের শাখা থেকে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদনের ঘটনা সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে ২০২১-২২ এবং   ২০২২-২৩ ২০২৪ অর্থ বছরে, কোনো রকম প্রকৃত ব্যবসায়িক   কার্যক্রম   ছাড়াই   ঘুষের   বিনিময়ে   উপরে   উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেয়।সূত্র জানায়,ঘটনার পেছনে রয়েছেন হেক্সা সলিউশনস নামধারী প্রতিষ্ঠানের কথিত মালিক মো. আবুল হাসনাত এবং ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো: সেলিম তোহা (সেতু)।আবুল হাসনাত ব্যাংক ব্যবস্থাপক সেলিম তোহাকে ঋণ অনুমোদনের জন্য নগদ টাকা ঘুষ দেন। এর বিনিময়ে, কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই, ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে সাড়ে ৩ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করিয়ে দেন। এদিকে, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগের তদন্তে দেখা গেছে, ‘হেক্সা সলিউশনস’ নামে কোনো বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আসলে নেই। কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন-আরজেএস-এ খোঁজ নিলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির নামের ঠিকানায় অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, সেখানে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা চলছে এবং স্থানীয়রা জানান, “এখানে কখনোই এমন কোনো অফিস ছিল না।” বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট অগ্রণী ব্যাংকের শাখা সূত্র জানায়, “ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিটে বিষয়টি ধরা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।” একাধিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এই ধরনের দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতা প্রমাণ করে যে, দেশের আর্থিক খাতের ব্যাংকগুলো এখনও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এমনকি ব্যাংকের ভেতরেই কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়েছে।দেশের প্রকৃত উদ্যোক্তারা যখন বৈধ ব্যবসার জন্য ব্যাংক ঋণ পেতে সমস্যায় পড়েন, তখন কিভাবে একটি অস্থিত্বহীন প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা ঋণ পায়, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে?এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজ। হেক্সা সলিউশনস নামক প্রতিষ্ঠানের কথিত মালিক মো. আবুল হাসনাতের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড দৌলতপুর শাখার ব্যবস্থাপক মো: সেলিম তোহার সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। চলমান...

জালিয়াতিতেই উত্থান অ্যালকেমের আবুল হাসনাতের