চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গাজী তাহমিদ খান (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত তাহমিদ বারৈয়ারহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব হিঙ্গুলী এলাকার মোহাম্মদ আলমগীরের ছেলে। বৈষম্যেবিরোধী আন্দোলন সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের উত্তর জেলা সদস্য হয়েছিলেন। সবশেষ তিনি ছাত্রদলের যোগ দেন। এছাড়াও তাহমিদ নিরাপদ সড়ক চাই মিরসরাই উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে বারইয়ারহাট পৌর বাজারে একটি দোকানে পায়ের ওপর পা তুলে বসে ছিলেন হিঙ্গুলী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুবায়ের। এ সময় বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটনকে দেখে জুবায়ের পা নামিয়ে না বসায় তিনি লাথি দেন। এর ফলে উভয় গ্রুপের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা চলে যান। পরে লিটন ও জুবায়েরের নিজ নিজ এলাকা জামালপুর ও হিঙ্গুলীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তাহমিদ, রায়হান, মোহন দে, আবির ও মোজম্মেলসহ ৮ থেকে ১০ জন আহত হন। পরে তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চমেক হাসপাতালে কর্মরত জেলা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, তাহমিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে জোরারগঞ্জে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রাতে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহত তাহমিদের বাবা মো. আলমগীর বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে এভাবে মেরে ফেললো। আমার ছেলে কোনো দোষ করেনি। যদি সে দোষ করে থাকে তাহলে আমি বিচার করতাম। আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
বারইয়ারহাট পৌরসভা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোহন দে জানান, বুধবার বিকেলে লিটন ও জুবায়েরের মধ্যে বিবাদের মিমাংসার জন্য তারা কয়েকজন ট্রাফিক মোড়ে যান। সেখানে কথোপকথনের এক পর্যায়ে লিটনের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাহমিদ তাদের এলাকার হওয়ায় তাকে লক্ষ্য করে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটন সংঘর্ষে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার পূর্বে সামান্য ঝগড়া হয়েছিল। তবে পরে কি হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। অভ্যন্তরীণ পূর্ব শত্রুতার জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক বলেন, জুনিয়র-সিনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপির একই গ্রুপের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাহমিদ নামে একজন নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ বর্তমানে চমেক হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ বাড়ি নেওয়া হবে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে