সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
The Dhaka News Bangla

গুমের মামলায় সশরীরে নয়, ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে চান সেনা কর্মকর্তারা

গুমের মামলায় সশরীরে নয়, ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে চান সেনা কর্মকর্তারা

আওয়ামী লীগের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতায় থাকার সময় টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বিরোধী মতাদর্শের লোকদের তুলে নিয়ে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি আলাদা মামলায় আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই মামলায় ১৩ জন সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন। তবে পরবর্তী শুনানিতে তারা সশরীরে উপস্থিত না হয়ে ভার্চুয়ালি হাজির হওয়ার আবেদন করেছেন তাদের আইনজীবীরা।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কয়েকজন আসামির পক্ষে এ সংক্রান্ত আবেদন করেন আইনজীবী মাইদুল ইসলাম পলক। বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

এদিন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ দুই মামলায় শুনানি হবে। সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ফেরত সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও পলাতক আসামিদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি-র্যাব সদস্যরা। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন দায়িত্বরতরা।

গত ২০ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের এ দুই মামলার শুনানি দিন ধার্য ছিল। তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ঠিক করা হয়। ২৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

এর আগে, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাতদিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। যার এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

গত ৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) গোপন সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়।

অন্যরা হলেন- শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র্যাব কর্মকর্তা কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, মাহবুব আলম, আবদুল্লাহ আল মোমেন, সারোয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।

এছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায়ও শেখ হাসিনা-তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম রয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লে. জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল (অব) মখসুরুল হক। এ মামলায় তিনজন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে

The Dhaka News Bangla

সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫


গুমের মামলায় সশরীরে নয়, ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে চান সেনা কর্মকর্তারা

প্রকাশের তারিখ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫

featured Image
আওয়ামী লীগের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতায় থাকার সময় টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বিরোধী মতাদর্শের লোকদের তুলে নিয়ে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি আলাদা মামলায় আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই মামলায় ১৩ জন সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন। তবে পরবর্তী শুনানিতে তারা সশরীরে উপস্থিত না হয়ে ভার্চুয়ালি হাজির হওয়ার আবেদন করেছেন তাদের আইনজীবীরা।রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কয়েকজন আসামির পক্ষে এ সংক্রান্ত আবেদন করেন আইনজীবী মাইদুল ইসলাম পলক। বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।এদিন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ দুই মামলায় শুনানি হবে। সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ফেরত সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও পলাতক আসামিদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি-র্যাব সদস্যরা। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন দায়িত্বরতরা।গত ২০ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের এ দুই মামলার শুনানি দিন ধার্য ছিল। তবে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ঠিক করা হয়। ২৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।এর আগে, ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১৩ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাতদিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। যার এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।গত ৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) গোপন সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়।অন্যরা হলেন- শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র্যাব কর্মকর্তা কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, মাহবুব আলম, আবদুল্লাহ আল মোমেন, সারোয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।এছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায়ও শেখ হাসিনা-তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম রয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লে. জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল (অব) মখসুরুল হক। এ মামলায় তিনজন কারাগারে থাকলেও বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

The Dhaka News Bangla

সম্পাদক: তাসকিন আহমেদ রিয়াদ 

কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত