সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শিগগিরই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নির্বাচনটি সুন্দর, আনন্দমুখর ও উৎসবমুখর হবে।
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আসন্ন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। নির্বাচনের নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর আয়োজন নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের পুনর্গঠন ও জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে রয়েছে। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং চলমান সংস্কার কার্যক্রমেও বাহিনী মানুষের আস্থা বজায় রেখেছে। গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনী পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সহাবস্থায় বিশ্বাসী। তবে, যেকোনো আগ্রাসী আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং যুগোপযোগী প্রযুক্তি সংযোজনের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি অতীতের ফ্যাসিস্ট আমলে বাহিনীর দক্ষতার অবমূল্যায়নের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকল বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও জনকল্যাণমূলক কাজে যুবসমাজের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে বিএনসির কার্যক্রমও সম্প্রসারিত হয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত হয়। ২১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেন এবং দেশের মুক্তি নিশ্চিত করেন।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও গেরিলা লড়াইয়ের মাধ্যমে ১১টি সেক্টরে ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ গঠন করা হয়েছিল। এই যৌথ অভিযানের চূড়ান্ত ফল ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিজয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রফেসর ইউনূস উল্লেখ করেন, বিগত ৩৭ বছরে জাতিসংঘের ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশনে আমাদের শান্তিরক্ষীরা সফল ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানে ১০টি দেশে তারা নিয়োজিত, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে পরিচিত।
তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। সব সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।
বিষয় : প্রধান উপদেষ্টা

সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২১ নভেম্বর ২০২৫

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে