সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
The Dhaka News Bangla

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের গল্প বলছেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা আতিউর রহমান

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের গল্প বলছেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা আতিউর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

“সমস্যা নয়, সমাধান; হতাশা নয়, আশা”- এই মূলমন্ত্রেই এগিয়ে যাচ্ছেন তরুণ প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা আতিউর রহমান। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্যামেরা শুধু বাস্তবতার প্রতিবেদন নয়, পরিবর্তনের আহ্বানও জানাতে পারে।

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিউর রহমান পেশায় ফিল্মমেকার নন, কিন্তু জীবনকে দেখেন এক নির্মাতার চোখে। গ্রামের মেঠোপথ, বিলে জেলের জাল, চা-বাগানের শ্রমিক কিংবা নদীভাঙনে হারানো মানুষের মুখ, সবই তাঁর লেন্সে ধরা পড়ে জীবনের গল্প হয়ে।

এখন পর্যন্ত পাঁচটি উল্লেখযোগ্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। ‘চলন বিল’ এ উঠে এসেছে চলন বিল অঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থান; ‘প্রার্থনা’তে সুফি ও বাউল ফকিরদের আধ্যাত্মিক জীবনদর্শন; ‘চায়ের দেশ’–চা শ্রমিকদের ঘামঝরা বাস্তবতা; ‘আতিফের গল্প’–একজন পাঠাগার উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণাদায়ী পথচলা; আর ‘জেলের আর্তনাদ’–প্রান্তিক জেলে পরিবারের টিকে থাকার সংগ্রাম। প্রতিটি ছবিই বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের এক মানবিক দলিল।

আতিউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ঘুরে আমি দেখেছি মানুষের জীবনে কষ্ট আছে, কিন্তু তার চেয়েও বড় তাদের সাহস। আমি সেই সাহসটাই দেখাতে চাই, যাতে অন্য কেউ অনুপ্রাণিত হয়।”

নৌকাবাইচের উৎসব, বর্ষার বিল, প্রান্তিক কৃষকের হাসি, পুরান ঢাকার সংস্কৃতি কিংবা সুন্দরবনের মানুষের জীবন সবকিছুই তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়ে এক গভীর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে। 

তিনি বলেন, “জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অসহায় মানুষদের দেখেছি, যাদের কথা কেউ শুনত না। তখনই মনে হয়েছে, ফিল্মই পারে মানুষকে মানুষের মনে পৌঁছে দিতে।”

তাঁর প্রামাণ্যচিত্রগুলোয় দেখা যায় নদীভাঙন, বন্যা বা জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কেমন করে নতুন করে জীবন গড়ে তোলে। স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষক, সমাজসেবক যাঁরা ছোট পরিসরে বড় পরিবর্তন আনছেন, তাঁদের গল্পই তিনি ক্যামেরায় ধারণ করেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আতিউর বলেন, “দেশে যেসব জায়গায় পরিবর্তন দরকার, সেসব বিষয় আমি ফিল্মের মাধ্যমে মানুষের সামনে আনতে চাই। যাতে দর্শক শুধু সমস্যাই না দেখে, সমাধানের পথও খুঁজে পায়।”

তাঁর নির্মিত বেশ কিছু কাজ ইতোমধ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদর্শনীতে প্রশংসিত হয়েছে। তরুণ এই নির্মাতা মনে করেন, “ফিল্ম কেবল বিনোদনের জন্য নয়, এটি সামাজিক সচেতনতার সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।”

তরুণ প্রজন্মের প্রতি তাঁর আহ্বান নিজেদের আশেপাশের ইতিবাচক গল্পগুলো তুলে ধরার। “সমস্যা সবাই দেখায়,” বলেন আতিউর, “কিন্তু আমরা যদি সমাধান দেখাতে পারি, তবেই আসবে সত্যিকারের পরিবর্তন।”

প্রামাণ্যচিত্রের ভাষায় সেই পরিবর্তনের গল্পই বলে যাচ্ছেন আতিউর রহমান, প্রত্যন্ত বাংলার নিভৃত জনপদের মানুষের কথা, তাদের অদম্য জীবনীশক্তি আর অগোচর নায়কত্বের কাহিনি।

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে

The Dhaka News Bangla

সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫


প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের গল্প বলছেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা আতিউর রহমান

প্রকাশের তারিখ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫

featured Image
“সমস্যা নয়, সমাধান; হতাশা নয়, আশা”- এই মূলমন্ত্রেই এগিয়ে যাচ্ছেন তরুণ প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা আতিউর রহমান। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্যামেরা শুধু বাস্তবতার প্রতিবেদন নয়, পরিবর্তনের আহ্বানও জানাতে পারে।প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিউর রহমান পেশায় ফিল্মমেকার নন, কিন্তু জীবনকে দেখেন এক নির্মাতার চোখে। গ্রামের মেঠোপথ, বিলে জেলের জাল, চা-বাগানের শ্রমিক কিংবা নদীভাঙনে হারানো মানুষের মুখ, সবই তাঁর লেন্সে ধরা পড়ে জীবনের গল্প হয়ে।এখন পর্যন্ত পাঁচটি উল্লেখযোগ্য প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। ‘চলন বিল’ এ উঠে এসেছে চলন বিল অঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থান; ‘প্রার্থনা’তে সুফি ও বাউল ফকিরদের আধ্যাত্মিক জীবনদর্শন; ‘চায়ের দেশ’–চা শ্রমিকদের ঘামঝরা বাস্তবতা; ‘আতিফের গল্প’–একজন পাঠাগার উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণাদায়ী পথচলা; আর ‘জেলের আর্তনাদ’–প্রান্তিক জেলে পরিবারের টিকে থাকার সংগ্রাম। প্রতিটি ছবিই বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের এক মানবিক দলিল।আতিউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ঘুরে আমি দেখেছি মানুষের জীবনে কষ্ট আছে, কিন্তু তার চেয়েও বড় তাদের সাহস। আমি সেই সাহসটাই দেখাতে চাই, যাতে অন্য কেউ অনুপ্রাণিত হয়।”নৌকাবাইচের উৎসব, বর্ষার বিল, প্রান্তিক কৃষকের হাসি, পুরান ঢাকার সংস্কৃতি কিংবা সুন্দরবনের মানুষের জীবন সবকিছুই তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়ে এক গভীর মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে। তিনি বলেন, “জীবনে অনেক কঠিন সময় পার করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অসহায় মানুষদের দেখেছি, যাদের কথা কেউ শুনত না। তখনই মনে হয়েছে, ফিল্মই পারে মানুষকে মানুষের মনে পৌঁছে দিতে।”তাঁর প্রামাণ্যচিত্রগুলোয় দেখা যায় নদীভাঙন, বন্যা বা জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কেমন করে নতুন করে জীবন গড়ে তোলে। স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষক, সমাজসেবক যাঁরা ছোট পরিসরে বড় পরিবর্তন আনছেন, তাঁদের গল্পই তিনি ক্যামেরায় ধারণ করেন।ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আতিউর বলেন, “দেশে যেসব জায়গায় পরিবর্তন দরকার, সেসব বিষয় আমি ফিল্মের মাধ্যমে মানুষের সামনে আনতে চাই। যাতে দর্শক শুধু সমস্যাই না দেখে, সমাধানের পথও খুঁজে পায়।”তাঁর নির্মিত বেশ কিছু কাজ ইতোমধ্যে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদর্শনীতে প্রশংসিত হয়েছে। তরুণ এই নির্মাতা মনে করেন, “ফিল্ম কেবল বিনোদনের জন্য নয়, এটি সামাজিক সচেতনতার সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।”তরুণ প্রজন্মের প্রতি তাঁর আহ্বান নিজেদের আশেপাশের ইতিবাচক গল্পগুলো তুলে ধরার। “সমস্যা সবাই দেখায়,” বলেন আতিউর, “কিন্তু আমরা যদি সমাধান দেখাতে পারি, তবেই আসবে সত্যিকারের পরিবর্তন।”প্রামাণ্যচিত্রের ভাষায় সেই পরিবর্তনের গল্পই বলে যাচ্ছেন আতিউর রহমান, প্রত্যন্ত বাংলার নিভৃত জনপদের মানুষের কথা, তাদের অদম্য জীবনীশক্তি আর অগোচর নায়কত্বের কাহিনি।

The Dhaka News Bangla

সম্পাদক: তাসকিন আহমেদ রিয়াদ 

কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত