
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই, এমনটি জানিয়েছে সেনাসদর।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা এবং আগামীকালের ভোট যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সেজন্য সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই। এর আগে আমরা আইএসপিআরের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবুও কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রোপাগান্ডা চালানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা এই প্রোপাগান্ডা করে খুব একটা লাভবান হতে পারবে না।
এই নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করছে আমরা সবার মঙ্গল কামনা করি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সুস্থ পরিবেশে গণতন্ত্র চর্চা হোক আমরা এটাই চাই এবং নির্বাচনের চর্চা হোক এটাই চাই, বলেন মো. শফিকুল ইসলাম।
সেনাবাহিনী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির কোনো বার্তা পেয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে ফরলাম কোনো নির্দেশনা পাইনি। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটা প্রস্তুতি অবশ্যই রয়েছে। আমাদেরকে নির্বাচন কমিশন থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে আমারা সে দায়িত্ব পালন করব।
সেনাবাহিনীকে নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত অনেক সেনাকর্মকর্তা প্রচারণা চালাচ্ছে, এ বিষয়টি সেনাবাহিনী কীভাবে দেখছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আপনারা বুঝতে পেরেছেন কে কি উদ্দেশ্যে এসব প্রোপাগান্ডা ও মিস-ইনফরমেশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছে। আপনারা ভালো বোঝেন, আপনাদের দায়িত্ব দিলাম কে কতটুকু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মবের বিষয়ে প্রশ্না করা হলে কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। প্রায় ৮০ শতাংশ হারানো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে। অস্ত্র উদ্ধার হলে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সহযোগিতা করবে।
তিনি মবের বিষয়ে বলেন, মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এটা বলেছি আমরা। যেখানে যখন মব হয়েছে সেখানে সেনাবাহিনী দ্রুততার সঙ্গে পোঁছে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। কয়েকটি জায়গা আমাদের যে বিলম্ব হয়েছে সেটা সোর্স থেকে তথ্য পেতে বিলম্ব হয়েছে। যেকোনো ঘটনা ঘটার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন হয়। তারপর আমাদের অনুরোধ জানালে এর মধ্যে কিন্তু কিছু কালক্ষেপণ হয়ে গেছে, তারপর আমাদের নিকটস্থ ক্যাম্প থেকে যদি পেট্রোল পাঠায় তখনো কিছু সময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে আসলে যদি কোনো ঘটনা ঘটে যায় এটার দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিতে পারে না। এমন একটি উদাহরণ দেখানো যাবে না যে আমাদেরকে অনুরোধ করেছে আমরা যাইনি বা সেনাবাহিনীর সামনে মব হয়েছে সেনাবাহিনী যায়নি এই রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের ওপর আস্থা রাখেন আমরা চেষ্টা করছি সামনের দিনগুলোতে এই ধরনের ঘটনা ইনশাআল্লাহ আরও কমে আসবে।
গুম কমিশন নিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান কি এবং গুম কমিশনকে সেনাবাহিনী কীভাবে সহযোগিতা করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গুম কমিশন নিয়ে সেটা আসলে গুজব। কেননা গুম কমিশনের তদন্তের জন্য আমাদের যাদেরকে ডাকা হয়েছে সবাই গুম কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এখনো সহযোগিতা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও প্রয়োজন হলে সহযোগিতা করে যাবে।
সীমান্তে আরকানা আর্মির উৎপাত ও চোরাচালানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সীমান্তে যে সংস্থাগুলো কাজ করে তারা এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। তারা এ বিষয়ে সজাগ ও সোচ্চার আছে। এছাড়া সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এ বিষয়ে পরিস্থিতি অবনতি হলে সবাই সম্মিলিতভাবে ট্যাকেল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝটিকা মিছিলগুলো বা কোনো অ-নিষিদ্ধ দলের জন্য এই মিছিলগুলো করার জন্য যে নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষতিয়ে দেখবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিষয় : ডাকসু নির্বাচন ২০২৫
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে