রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
The Dhaka News Bangla

তদন্তে মায়ের অসুস্থতার প্রমাণ মেলেনি, পরীক্ষা নেওয়া হবে না আলোচিত আনিসার

তদন্তে মায়ের অসুস্থতার প্রমাণ মেলেনি, পরীক্ষা নেওয়া হবে না আলোচিত আনিসার

এইচএসসির প্রথমদিনে সময়মতো কেন্দ্রে না আসায় আনিসা আহমেদ বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে পারেননি এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই পরীক্ষার্থীর দাবি অনুযায়ী, মায়ের স্ট্রোকের কারণে তিনি পরীক্ষায় এক ঘণ্টা দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তার এই দাবির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে, বিশেষ ব্যবস্থায় তার পরীক্ষা নেওয়ার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা আর বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

কাঁদতে কাঁদতে সেদিন আনিসা জানিয়েছিলেন, অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল তাকে। সেজন্য কেন্দ্রে আসতে দেরি হয়েছে। আর দেরির কারণে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি।

সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের সামনে আনিসার ছোটাছুটি ও কান্নার সেই ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান নেটিজেনরা। তাকে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠে। সেই দাবি মেনে আনিসাকে পরীক্ষায় বসানো হবে বলে ঘোষণাও দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য একই সঙ্গে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি আনিসার পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি বাঙলা কলেজের পক্ষ থেকে। দুই পক্ষের তদন্তে আনিসার বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা মেলেনি। তাই আনিসাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তবে যদি আনিসা বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় ৬৬ নম্বর পায়, তাহলে দুই পত্র মিলিয়ে তাকে পাস করিয়ে দেওয়া হবে।

রোববার (১০ আগস্ট) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাইয়ের কাজ করা হয়েছে। সেগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। সে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করতে পারেসেক্ষেত্রে তাকে দুই পত্র (বাংলা প্রথমদ্বিতীয়পত্র) মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেতে হবেতাহলে তার রেজাল্ট আসবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব ও ঢাকা বোর্ডের দুই কর্মকর্তা জানান, মায়ের অসুস্থতা নিয়ে আনিসা যেভাবে তথ্যগুলো দিয়েছিল, তার সত্যতা মেলেনি। তার মা ওই হাসপাতালের নিয়মিত রোগী। সেদিন সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছিল; এমন তথ্যেরও সত্যতা মেলেনি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসা আমাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেনি। ঢাকা বোর্ড ও বাঙলা কলেজ যে তদন্ত কমিটি করেছিল, তারা আমাদের কাছে হাসপাতালে ভর্তির স্লিপসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত চেয়েছিল। আমরা সেগুলো আনিসার কাছ থেকে নিয়ে কমিটিকে দিয়েছিলাম। এখন শিক্ষার্থী যদি ভুয়া স্লিপ এনে দেয়, তাহলেও তো আমাদের কিছু করার নেই। সেটার সত্যতা তদন্ত কমিটি যাচাই করেছে। যতদূর জেনেছি, ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় বোর্ড তার আর পরীক্ষা নিচ্ছে না। এখন যে উপায়টা আছে, তা হলো দুই পত্র মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেলে পাস ধরা হয়। সেক্ষেত্রে বাংলা দ্বিতীয়পত্রে আনিসা ৬৬ পেলে এবং বাকি সব বিষয়ে পাস করলে; সে পাস করে যাবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, ‘আনিসার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই’। তিনি প্রচলিত নিয়ম উল্লেখ করে বলেন, কোনো পরীক্ষার্থী প্রথম পত্রে পরীক্ষা দিতে না পারলে দ্বিতীয় পত্রে ৬৬ নম্বর পেলে উভয় পত্রে পাস হিসেবে গণ্য হবে।

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে

The Dhaka News Bangla

রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫


তদন্তে মায়ের অসুস্থতার প্রমাণ মেলেনি, পরীক্ষা নেওয়া হবে না আলোচিত আনিসার

প্রকাশের তারিখ : ১০ আগস্ট ২০২৫

featured Image
এইচএসসির প্রথমদিনে সময়মতো কেন্দ্রে না আসায় আনিসা আহমেদ বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে পারেননি এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই পরীক্ষার্থীর দাবি অনুযায়ী, মায়ের স্ট্রোকের কারণে তিনি পরীক্ষায় এক ঘণ্টা দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তার এই দাবির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে, বিশেষ ব্যবস্থায় তার পরীক্ষা নেওয়ার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা আর বাস্তবায়িত হচ্ছে না।কাঁদতে কাঁদতে সেদিন আনিসা জানিয়েছিলেন, অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল তাকে। সেজন্য কেন্দ্রে আসতে দেরি হয়েছে। আর দেরির কারণে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি।সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের সামনে আনিসার ছোটাছুটি ও কান্নার সেই ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান নেটিজেনরা। তাকে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠে। সেই দাবি মেনে আনিসাকে পরীক্ষায় বসানো হবে বলে ঘোষণাও দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য একই সঙ্গে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি আনিসার পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি বাঙলা কলেজের পক্ষ থেকে। দুই পক্ষের তদন্তে আনিসার বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা মেলেনি। তাই আনিসাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তবে যদি আনিসা বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় ৬৬ নম্বর পায়, তাহলে দুই পত্র মিলিয়ে তাকে পাস করিয়ে দেওয়া হবে।রোববার (১০ আগস্ট) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাইয়ের কাজ করা হয়েছে। সেগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। সে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে দুই পত্র (বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেতে হবে। তাহলে তার রেজাল্ট আসবে।’নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব ও ঢাকা বোর্ডের দুই কর্মকর্তা জানান, মায়ের অসুস্থতা নিয়ে আনিসা যেভাবে তথ্যগুলো দিয়েছিল, তার সত্যতা মেলেনি। তার মা ওই হাসপাতালের নিয়মিত রোগী। সেদিন সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছিল; এমন তথ্যেরও সত্যতা মেলেনি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসা আমাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেনি। ঢাকা বোর্ড ও বাঙলা কলেজ যে তদন্ত কমিটি করেছিল, তারা আমাদের কাছে হাসপাতালে ভর্তির স্লিপসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত চেয়েছিল। আমরা সেগুলো আনিসার কাছ থেকে নিয়ে কমিটিকে দিয়েছিলাম। এখন শিক্ষার্থী যদি ভুয়া স্লিপ এনে দেয়, তাহলেও তো আমাদের কিছু করার নেই। সেটার সত্যতা তদন্ত কমিটি যাচাই করেছে। যতদূর জেনেছি, ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় বোর্ড তার আর পরীক্ষা নিচ্ছে না। এখন যে উপায়টা আছে, তা হলো দুই পত্র মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেলে পাস ধরা হয়। সেক্ষেত্রে বাংলা দ্বিতীয়পত্রে আনিসা ৬৬ পেলে এবং বাকি সব বিষয়ে পাস করলে; সে পাস করে যাবে।’এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, ‘আনিসার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই’। তিনি প্রচলিত নিয়ম উল্লেখ করে বলেন, কোনো পরীক্ষার্থী প্রথম পত্রে পরীক্ষা দিতে না পারলে দ্বিতীয় পত্রে ৬৬ নম্বর পেলে উভয় পত্রে পাস হিসেবে গণ্য হবে।

The Dhaka News Bangla


কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত