
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন দেশে ফিরে আসবেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার হবে, এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আমাদের সব চেষ্টাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা। আমরা চাই তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আছে সেটার ন্যায়বিচার তিনি যাতে পান। আমরা সেটা চাই। এটাই বর্তমান সরকারের অন্যতম সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
তিনি বলেছেন, আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এবং বিবিসির প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে তার ভূমিকা কী ছিল। কিভাবে তিনি আন্দোলনকারীদের হত্যা করতে মরণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন। এই বিষয়গুলো এখন সারা বিশ্ব জানে তিনি কী করেছেন।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা মনে করি এসব বিষয় যত সামনে আসবে, তার ওপর ততো বেশি চাপ তৈরি হবে। যাতে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আমরা আশা করি, একদিন না একদিন তিনি ফিরে আসবেন এবং এই বিচারের সম্মুখীন হবেন।
৮ আগস্ট সরকারের এক বছর হচ্ছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, প্রশাসন ভেঙে পড়া, মোটাদাগে বড় বড় জায়গায় সরকারের একটু ব্যর্থতা দৃশ্যমান, যেটা মানুষ বলছে, গণমাধ্যমেও আসছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রেস সচিব বলেন, এ বিষয়ে আমি একমত নই। আমরা কিছুদিন আগে গত সাড়ে পাঁচ বছরের অপরাধের পুরো পরিসংখ্যান দিয়েছি। ওই পরিসংখ্যান কিন্তু প্রমাণ করে না আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি একটা-দুইটা খুব সেনসেশনাল মার্ডার হলে অনেকে ভাবছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বুঝি ভেঙে পড়ছে।
তিনি বলেন, আমরা পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে বলে দিয়েছি পুরো স্বচ্ছ থাকতে। তারা প্রতি মাসের পরিসংখ্যান দিচ্ছে। জুলাই মাসের পরিসংখ্যানটা তাদের কাছ থেকে নেন। নিজেরাই তুলনা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা কি!
প্রেস সচিব বলেন, আমরা যখন বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলি তারা বলেন- তারা যে পরিসংখ্যানটা দেখেন তারা মনে করেন বাংলাদেশ একটা স্বল্প অপরাধ প্রবণ দেশ। আপনারা যেটা বলছেন সেটা অনেকটা টকশোতে যারা এই ধরনের কথা বলেন সেটাই প্রতিফলন হচ্ছে।
শফিকুল আলম বলেন, প্রশাসন ভেঙে পড়লে আমাদের এত অর্জন হতো? গত বছর শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে যান তখন খাদ্যের মজুদ ছিল ১৮ লাখ টন। এখন আমাদের মজুদ ২১ লাখ টন। আমরা গত এক বছরে চার বিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছি। এক বছরে আমরা মূল্যস্ফীতি নামিয়ে এনেছি। আমরা ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করেছি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এই কাজগুলো কারা করেন? আমলারাই তো করেন। এসব অর্জন কি প্রশাসন ভেঙে পড়ার কারণে হয়? এই প্রশাসন দিয়ে তো এই অর্জন হয়েছে। পরিসংখ্যান নিয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে আপনি দেখান কোথায় কোথায় ভেঙে পড়েছে। গত বছর আমরা ছয় ছয়টি বন্যা মোকাবেলা করেছি, মাঠ প্রশাসন এ বন্যার মোকাবেলা করেছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেছেন এই দুর্বল সরকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমাদের যে টিম, আজকে সবাই তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, খুনের হিসাবের মধ্যেই সেটার প্রতিফলন রয়েছে। আর অন্তর্বর্তী সরকার হওয়ায় সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৭ আগস্ট ২০২৫
যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে