শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
The Dhaka News Bangla

আমি রাজনীতি করিনি, রাজনীতি বুঝিও না আদালতে অপু বিশ্বাস

আমি রাজনীতি করিনি, রাজনীতি বুঝিও না আদালতে অপু বিশ্বাস

গত বছরের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানীর ভাটারা থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার পরিচিত চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। তিনি গতকাল (১৩ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় তিনি মুখে মাস্ক ও বোরকা পরে আদালতে উপস্থিত হন।

এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান শুনানিতে বলেন, এজাহারে অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থের জোগানের কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। তিনি নুসরাত ফারিয়ার জামিনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন এবং জানান যে বাদী হলফনামা দিয়ে তার ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। আইনজীবী জোর দেন যে, অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই এবং তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। পরবর্তীতে তার জামিন চাওয়া হয়।

এদিকে শুনানির একপর্যায়ে বিচারক অপু বিশ্বাসের কাছে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি দুবার মাথা নেড়ে ‘না’ উত্তর দেন। এ সময় তাকে হাসিমুখে দেখা যায়। বিচারকের জিজ্ঞাসার পর এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ‘অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। টাকার বিনিময়ে মঞ্চে-স্টেজে নেচে-গেয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে এগিয়ে দিত। সে আবার হাসে।’

এক পর্যায়ে অপু বিশ্বাস কিছু বলতে চাইলে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন তাকে থামিয়ে বলেন, ‘র‍্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। লাশের বন্যা বয়ে যায়। এ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যারা ছিল, তারা সবাই শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেছে। এই অপু বিশ্বাসরা ফেরদৌসের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করে। শেখ হাসিনা আবার আসবে বলে তারা মনে করেন।’

পাবলিক প্রসিকিউটরের এমন মন্তব্যের পর অপু বিশ্বাস নিজ থেকে বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ তার এই বক্তব্য শুনে উপস্থিত অনেক আইনজীবী ‘আহা আহা সাধু’ বলতে থাকেন।

এ সময় কিছু উত্তেজিত আইনজীবী মন্তব্য করেন যে, অপু বিশ্বাস সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন এবং তিনি শেখ হাসিনার ‘দোসর’। এর জবাবে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এই কথাগুলো বলার সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করে ওঠে।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদনের আগ পর্যন্ত অপু বিশ্বাসের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে এবং তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন এনামুল হক। এ মামলায় ২০৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের নাম রয়েছে।

বিষয় : আদালত অপু বিশ্বাস

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে

The Dhaka News Bangla

শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫


আমি রাজনীতি করিনি, রাজনীতি বুঝিও না আদালতে অপু বিশ্বাস

প্রকাশের তারিখ : ১৪ জুলাই ২০২৫

featured Image
গত বছরের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজধানীর ভাটারা থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার পরিচিত চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। তিনি গতকাল (১৩ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় তিনি মুখে মাস্ক ও বোরকা পরে আদালতে উপস্থিত হন।এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান শুনানিতে বলেন, এজাহারে অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থের জোগানের কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। তিনি নুসরাত ফারিয়ার জামিনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন এবং জানান যে বাদী হলফনামা দিয়ে তার ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। আইনজীবী জোর দেন যে, অপু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই এবং তিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী। পরবর্তীতে তার জামিন চাওয়া হয়।এদিকে শুনানির একপর্যায়ে বিচারক অপু বিশ্বাসের কাছে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি দুবার মাথা নেড়ে ‘না’ উত্তর দেন। এ সময় তাকে হাসিমুখে দেখা যায়। বিচারকের জিজ্ঞাসার পর এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ‘অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। টাকার বিনিময়ে মঞ্চে-স্টেজে নেচে-গেয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে এগিয়ে দিত। সে আবার হাসে।’এক পর্যায়ে অপু বিশ্বাস কিছু বলতে চাইলে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন তাকে থামিয়ে বলেন, ‘র‍্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। লাশের বন্যা বয়ে যায়। এ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যারা ছিল, তারা সবাই শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেছে। এই অপু বিশ্বাসরা ফেরদৌসের নেতৃত্বে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করে। শেখ হাসিনা আবার আসবে বলে তারা মনে করেন।’পাবলিক প্রসিকিউটরের এমন মন্তব্যের পর অপু বিশ্বাস নিজ থেকে বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ তার এই বক্তব্য শুনে উপস্থিত অনেক আইনজীবী ‘আহা আহা সাধু’ বলতে থাকেন।এ সময় কিছু উত্তেজিত আইনজীবী মন্তব্য করেন যে, অপু বিশ্বাস সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন এবং তিনি শেখ হাসিনার ‘দোসর’। এর জবাবে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এই কথাগুলো বলার সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করে ওঠে।উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদনের আগ পর্যন্ত অপু বিশ্বাসের জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পেয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে এবং তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন এনামুল হক। এ মামলায় ২০৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের নাম রয়েছে।

The Dhaka News Bangla


কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত