
বাংলাদেশে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকা অনলাইন গেম ‘ফ্রি ফায়ার’-এর এনিভার্সারি উদযাপন করা হয়েছে কক্সবাজারে। শুক্রবার (১১জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শহরের কলাতলী এলাকায় একটি অভিজাত হোটেলে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় প্রায় ৫শতাধিক কিশোর ও তরুণ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেক কেটে এবং ফ্রি ফায়ারের লোগো সংবলিত ব্যানার হাতে তারা ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করে। কেকের ওপরে বড় করে লেখা ছিল – “Happy Free Fire 8 Anniversary”। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ছিল স্কুলপড়ুয়া। তাদের মধ্যে কয়েকজনের পরনে স্কুল ইউনিফর্মও দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ফ্রি ফায়ার তো নিষিদ্ধ। তারপরও এভাবে প্রকাশ্যে উদযাপন খুবই দুঃখজনক। আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পরিবর্তে দিনরাত এই গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে।”
আরেকজন অভিভাবক জানান, “আমি সকালে কাজে যাওয়ার সময় দেখি, কিছু ছেলে ফ্রি ফায়ারের ব্যানার নিয়ে সবাই টিশার্ট পরে ছবি তুলছে। পরে শুনি ওরা কেক কেটেছে। প্রশাসন যদি এদের এখনই না থামে, তাহলে ভবিষ্যতে বিপদ আরও বড় হবে।”
কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গেমের এনিভার্সারি উদযাপনের কোনো অনুমতি তারা দেয়নি। এ ধরনের কোনো আয়োজনের খবর থাকলে শুরুতেই বাধা দেওয়া হতো। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইটি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম শিশু-কিশোরদের মধ্যে আসক্তি, সহিংস মনোভাব ও লেখাপড়ায় অমনোযোগের প্রবণতা বাড়ায়। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার এসব গেম সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপরও VPN ও বিভিন্ন অবৈধ সার্ভারের মাধ্যমে গোপনে এই গেম খেলে যাচ্ছে অনেক কিশোর।
কক্সবাজারের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, “এখন শুধু লুকিয়ে খেলে না, বরং প্রকাশ্যে কেক কেটে এনিভার্সারি করছে। এটি খুবই ভয়াবহ। এই গেমের নেতিবাচক প্রভাব থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে না পারলে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা বাড়বে।”
এনিভার্সারি উদযাপনের ভিডিও, ছবি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সচেতন মহল বলছেন, এ ধরনের গেমের আসক্তি রোধে অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১৩ জুলাই ২০২৫
যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে