
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখায় কর্মরত নৈশপ্রহরী আকতারুজ্জামান-এর বিরুদ্ধে উঠেছে ভয়াবহ অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অসদাচরণের অভিযোগ। কেবল রাতেই নয়, দিনের বেলাতেও অফিসজুড়ে প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন এই কর্মচারী। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হয় না তার ‘অনুমতি’ ছাড়া।
সরেজমিনে এবং একাধিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও আকতার দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে বসেছেন। ফাইল ঘাঁটা, দাপ্তরিক কাগজপত্রে অনধিকার প্রবেশ, সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া,এসবই এখন তার নিত্যদিনের কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে। অফিসের অন্য কর্মচারীরাও অনেক সময় তার অতিরিক্ত দাপটের কারণে অসহায় হয়ে পড়ছেন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, বহু বছর ধরে একই অফিসে থেকে আকতার গড়ে তুলেছেন একটি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট। নিজের নামের সঙ্গে যুক্ত করছেন রাজনৈতিক পরিচয়। স্থানীয়ভাবে দাবি করেন, তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। তবে বাস্তবে তার সহচরদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নামে-বেনামে সরকারবিরোধী পোস্ট ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এই চক্রের অন্যতম সহযোগী বলে পরিচিত ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার বাকিরুল ইসলাম। তিনিও ভুক্তভোগীদের কাছে ঘুষ নেওয়ার নানা অভিযোগে অভিযুক্ত।
মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, রামুসহ বিভিন্ন উপজেলার বহু জমির মালিক অভিযোগ করেছেন, “অফিসে কোনো ফাইল চালাতে হলে টাকা লাগবেই। টাকা না দিলে ফাইল আটকে যায় কিংবা হারিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে আকতার সরাসরি হুমকি দেয়।”
বলা হচ্ছে, এই সিন্ডিকেটের পেছনে কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের চক্র রয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে জাতীয় পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও, এখনো দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আকতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো অভিযোগ স্বীকার না করে উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই কথা বলেন।
এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভুক্তভোগীদের দাবি, এই সিন্ডিকেট যদি বন্ধ না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
বিষয় : কক্সবাজার
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২১ জুন ২০২৫
যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে