বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
The Dhaka News Bangla

জোয়ারের চাপে ভেঙে গেছে প্রধান সড়ক, চরম দুর্ভোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা

জোয়ারের চাপে ভেঙে গেছে প্রধান সড়ক, চরম দুর্ভোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা
জোয়ারের চাপে ভেঙে গেছে প্রধান সড়ক, চরম দুর্ভোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে এলাকার একমাত্র প্রধান সড়কটির একাধিক অংশ ভেঙে গেছে। ফলে স্থানীয়দের চলাচলে নৌকা এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও সাগরের পানি বৃদ্ধিতে নিঝুম দ্বীপের প্রতিটি গ্রাম প্লাবিত হয়। তীব্র জোয়ারের ধাক্কায় বন্দরটিলা বাজার, ছোয়াখালী এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় সড়ক ভেঙে যায়। ফলে এক প্রান্তের সাথে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও জরুরি সেবার ওপর এর প্রভাব পড়েছে মারাত্মকভাবে।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে আইলা প্রকল্পে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নামার বাজার বিচ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আরসিসি ঢালাইয়ে ১০ কিলোমিটারের এই সড়কটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ১৪ বছরে একবারও করা হয়নি মেরামত। সড়কটি বিভিন্ন সময় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে একাধিবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন বলেন, নিঝুম দ্বীপে কয়েক বছর ধরে নদীভাঙন, জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত সমস্যা বেড়েই চলেছে। এবারের জোয়ারের ধাক্কায় আমাদের নিঝুমদ্বীপের প্রধান সড়ক একাধিক জায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রধান সড়কটি ভেঙে অনেক জায়গায় খালে পরিণত হয়। হাসপাতালে যাওয়ার মতো অবস্থা নাই। শিগগিরই সড়ক নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি আমরা। 

আল আমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জোয়ারের কারণে নিঝুম দ্বীপের সব রাস্তা ঘাট ভাঙা। আমরা স্কুলে যারা পড়াশোনা করি তাদের আসা যাওয়া করতে খুব কষ্ট হয়। যদি রাস্তা ভালো হতো তাহলে স্কুলে আসতে সুবিধা হতো। সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে কিছুদিন আগেও ইউপি সদস্যের ছেলে মারা গেছে।

নিঝুম দ্বীপের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কেফায়েত উদ্দিন বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের একমাত্র সড়কটি ২০১১ সালে নির্মাণ হলেও একবারও তা মেরামত করা হয়নি। জলোচ্ছ্বাসে নিঝুম দ্বীপের সড়কের অবস্থা খারাপ। সারা দেশে উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু নিঝুমদ্বীপে উন্নয়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে বেড়িবাঁধ করে দিলে নিঝুমদ্বীপের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যেতো।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) লাভলী আক্তার বলেন, নিম্নচাপের কারণে এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। কয়েক জায়গায় পুরো রাস্তা ভেঙে গেছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।

হাতিয়া উপজেলার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে সড়কটি মেরামত করা হয়নি। আসলে নিঝুম দ্বীপে আরসিসি ঢালাই ছাড়া রাস্তা নির্মাণ সম্ভব নয়। জোয়ারের প্রভাবে অন্য রাস্তা টেকানো সম্ভব নয়। এছাড়াও রাস্তাটি প্রশস্ত করতে হবে। এটির ডিপিপি পাস হয়েছে তবে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হবে। সেজন্য ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষ আসবে। আশা করি দ্রুতই রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে।

বিষয় : বন্যা

যুক্ত থাকুন দ্যা ঢাকা নিউজের সাথে

The Dhaka News Bangla

বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫


জোয়ারের চাপে ভেঙে গেছে প্রধান সড়ক, চরম দুর্ভোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা

প্রকাশের তারিখ : ৩০ মে ২০২৫

featured Image
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে এলাকার একমাত্র প্রধান সড়কটির একাধিক অংশ ভেঙে গেছে। ফলে স্থানীয়দের চলাচলে নৌকা এখন একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।জানা যায়, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও সাগরের পানি বৃদ্ধিতে নিঝুম দ্বীপের প্রতিটি গ্রাম প্লাবিত হয়। তীব্র জোয়ারের ধাক্কায় বন্দরটিলা বাজার, ছোয়াখালী এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় সড়ক ভেঙে যায়। ফলে এক প্রান্তের সাথে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও জরুরি সেবার ওপর এর প্রভাব পড়েছে মারাত্মকভাবে।উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে আইলা প্রকল্পে বন্দরটিলা ঘাট থেকে নামার বাজার বিচ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আরসিসি ঢালাইয়ে ১০ কিলোমিটারের এই সড়কটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ১৪ বছরে একবারও করা হয়নি মেরামত। সড়কটি বিভিন্ন সময় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে একাধিবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।স্থানীয় বাসিন্দা ও পল্লী চিকিৎসক মো. বেলাল হোসেন বলেন, নিঝুম দ্বীপে কয়েক বছর ধরে নদীভাঙন, জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত সমস্যা বেড়েই চলেছে। এবারের জোয়ারের ধাক্কায় আমাদের নিঝুমদ্বীপের প্রধান সড়ক একাধিক জায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রধান সড়কটি ভেঙে অনেক জায়গায় খালে পরিণত হয়। হাসপাতালে যাওয়ার মতো অবস্থা নাই। শিগগিরই সড়ক নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি আমরা। আল আমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জোয়ারের কারণে নিঝুম দ্বীপের সব রাস্তা ঘাট ভাঙা। আমরা স্কুলে যারা পড়াশোনা করি তাদের আসা যাওয়া করতে খুব কষ্ট হয়। যদি রাস্তা ভালো হতো তাহলে স্কুলে আসতে সুবিধা হতো। সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে কিছুদিন আগেও ইউপি সদস্যের ছেলে মারা গেছে।নিঝুম দ্বীপের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কেফায়েত উদ্দিন বলেন, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের একমাত্র সড়কটি ২০১১ সালে নির্মাণ হলেও একবারও তা মেরামত করা হয়নি। জলোচ্ছ্বাসে নিঝুম দ্বীপের সড়কের অবস্থা খারাপ। সারা দেশে উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু নিঝুমদ্বীপে উন্নয়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে বেড়িবাঁধ করে দিলে নিঝুমদ্বীপের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যেতো।নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) লাভলী আক্তার বলেন, নিম্নচাপের কারণে এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। কয়েক জায়গায় পুরো রাস্তা ভেঙে গেছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।হাতিয়া উপজেলার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, নানা কারণে সড়কটি মেরামত করা হয়নি। আসলে নিঝুম দ্বীপে আরসিসি ঢালাই ছাড়া রাস্তা নির্মাণ সম্ভব নয়। জোয়ারের প্রভাবে অন্য রাস্তা টেকানো সম্ভব নয়। এছাড়াও রাস্তাটি প্রশস্ত করতে হবে। এটির ডিপিপি পাস হয়েছে তবে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হবে। সেজন্য ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষ আসবে। আশা করি দ্রুতই রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে।

The Dhaka News Bangla

প্রকাশক এবং সম্পাদক : তাসকিন আহমেদ রিয়াদ 

কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত