অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ||
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অধীনে থাকা মার্কেটিং বিভাগ তীব্র শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংকটে নাজেহাল অবস্থা। প্রতিবছর শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে শিক্ষক বাড়েনি।জানা গেছে, বিভাগটিতে বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ের ৫টি ব্যাচে পড়াশোনা করছেন প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী। অথচ তাদের পাঠদানের জন্য স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৪ জন। মাত্র ৪ জন শিক্ষক নিয়েই সব ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম অবস্থার সম্মুখীন তারা।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকা বাঞ্চনীয়। কার্যত যেখানে অন্তত ৮ জন শিক্ষক থাকার কথা সেখানে ৪ জন দিয়েই চলছে বিভাগীয় কার্যক্রম। অভিজ্ঞ ও পিএইচডিধারী শিক্ষকের অভাবে বিভাগে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালুর বিষয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে সদ্য স্নাতক পরীক্ষা সমাপ্ত করা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সে ভর্তি হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আশংকা দেখা দিয়েছে।শুধু শিক্ষকই নয়, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যাও অপ্রতুল মার্কেটিং বিভাগে। ১৫০ শিক্ষার্থীর জন্য আছেন মাত্র ২ জন কর্মচারী। নেই কোনো কোনো সহকারি রেজিস্ট্রার, সেকশন অফিসার সমমানের কর্মকর্তা। অধিকাংশ সময় কর্মচারীরাই নথিপত্রের দায়িত্ব পালন করেন বিধায় নানান ভুলভ্রান্তি দেখা দেয়। সেমিনার লাইব্রেরী কিংবা কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও নেই কোনো লাইব্রেরিয়ান, নেই ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট বা কম্পিউটার অপারেটর। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাতুল রহমান বলেন, শিক্ষক সংকট একজন শিক্ষককে ক্লাসে অতিরিক্ত সময় ব্যয়ে বাধ্য করে। এতে পাঠদানের মান যেমন হ্রাস পায়, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য জ্ঞান উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হয়।মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত একজন পূর্ণকালীন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্যে মাত্র দুই থেকে চারজন শিক্ষক কর্মরত আছেন। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আদর্শ অনুপাতকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের মার্কেটিং বিভাগের মাত্র চারজন শিক্ষক নিয়ে ৫টি ব্যাচের ২৫টি কোর্সের ক্লাস নিয়মিত নেয়া অনেক কষ্টসাধ্য। অতিরিক্ত কোনো ইভেন্ট, সেমিনার, কনফারেন্স আয়োজন করা যায় না, গবেষণার প্রতিও মনোযোগ ব্যহত হয়।’এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “শুধু মার্কেটিং নয়, বেশকিছু বিভাগে শিক্ষক সংকটের বিষয়ে অবগত আছি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) জানিয়েছি। আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। ইউজিসি বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া নতুন শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব নয়। পরবর্তী মিটিঙে বিষয়টি আবার উত্থাপন করবো।”
কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত