মামুন রাফী , স্টাফ রিপোর্টার ||
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। এ বিরোধ মীমাংসায় দেওয়া হয় অনেকবার প্রস্তাব। তাতেও রাজি হয়নি প্রতিপক্ষ । মীমাংসায় রাজি বা সম্মতি না হয়ে উল্টো দেওয়া হয় মিথ্যা বানোয়াট চাঁদা বাজীর মামলা। চাঁদাবাজির অভিযোগের মামলাটি করা হয় আদালতে। আদালতের নির্দেশে দেওয়া প্রতিবেদনে সত্য ঘটনা বলে স্বীকৃতি দেন এসআই। তাতে অনেকটা নাজেহাল পল্লিচিকিসৎক নুর উদ্দিনসহ গ্রামের অসহায় কয়েকজন দিনমজুর।এদিকে চাঁদাবাজির এই মামলার প্রধান সাক্ষাী সামছল আলম জানান, চাঁদাবাজীর অভিযোগটি সঠিক নয়। মামলা করতে হলে সত্য মিথ্যা গল্প জড়াতে হয়। তিনি এই মামলায় ১ নম্বর সাক্ষী। অথচ তিনি চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছুই জানেন না।শুধু সামছল আলম নয়। এই মামলার অন্যন্য সাক্ষীদের মধ্যে মাওলানা ফখরুল ইসলাম ও বেলাল উদ্দিন দুজন এই মামলার সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাদের মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে এটা আগে থেকে জানতেন না। বিভিন্ন সময় এসব সাক্ষীদের সাথে মোবাইলে কথা হয় সাংবাদিকদের। এসব কতোপকতন রেকর্ড করা হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলছে মো. আলীদের পরিবার ও পল্লীচিকিৎসক নূরউদ্দিনের পরিবারের সাথে। মো: আলীর বাড়ী লক্ষিপুর জেলোর রামগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রিপুর ইউনিয়নে। হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে পল্লীচিকিৎসক নুর উদ্দিনদের বাড়ীর পাশে জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। মো: আলীদের পূর্ব পুরুষের অনেক সম্পত্তি রয়েছে এখানে। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে আপোষ মীমাংসায় বশে আনতে না পেরে মো. আলী উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে প্রতিপক্ষের গরিব অসহায় একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন। এই কাজে মো: আলীকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় কিছু লোক।ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, জমির মালিকানা নির্ধারণে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ মো. আলী বাদী হয়ে ১০ এপ্রিল হাতিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৮ জনকে আসামী করে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। আদালত অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য হাতিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। তাতে দায়িত্ব দেওয়া সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ফরহাদ হোসেনকে। ফরহাদ হোসেন দায়িত্ব পেয়ে অভিযোগটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জামা দেন। তাতে তিনি ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭জনের সাথে কথা বলার কথা উল্লেখ করেছেন। আবার প্রত্যেকের স্বাক্ষর করা জবানবন্দী আদালতে জমা দেন বাস্তবে দেখা যায় তার বিপরীত। সাক্ষীদের অনেকে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে দেখা হয়নি বলেও জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।চাঁদাবাজী মামলার আসামী পল্লী চিকিৎসক মো: নুর উদ্দিন বলেন, মো: আলীর সাথে আমার ওয়ারিসূত্রে জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। আমাদের পূর্বপুরুষের নামে বন্দোবস্ত হওয়া জমি তাদের নামে রেকর্ড হয়ে গেছে। সেই রেকর্ড বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেছি আমরা। এই মামলার রায় তাদের বিরুদ্ধে যাবে মনে করে তারা আমাকে বিভিন্ন ভাবে বিপাকে পালানোর চেষ্ঠা করছে। সামাজিক ভাবে তারা বিভিন্ন লোকজন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এরপরও কিছুই করতে না পেরে আমিসহ কয়েকজন আসহায় লোককে চাঁদাবাজি মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। মামলার অন্য আসামীরা সবাই দিনমজুর অসহায়। মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মো: আলী লক্ষিপুরে থাকেন। হাতিয়ায় তেমন একটা আসেন না। এখানে কিছু লোককে টাকা পয়সা দিয়ে এসব কলকাঠি নাড়ছেন।এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ফাহাদ হোসেন বলেন, মামলাটি হওয়ার পরপরই নুর উদ্দিনকে আপোষ মীমাংসা করার জন্য বলেছি। তিনি তা শুনেন নি। চাদাবাজির অভিযোগে করা মামলার সাক্ষীরা কিছুই জানে না প্রতিবেদন কিভাবে দিলেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন সবাই লেখিত বক্তব্য দিয়েছে। সাক্ষীদের কথা রেকর্ড আছে এধরনের তথ্য দিলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্তের বিষয়ে আপত্তি থাকলে আমাকে প্রতিবেদন দেওয়ার আগে জানালে আমি ব্যবস্থা নিতাম। সঠিকটা খোঁজে বের করা পুলিশের কাজ। এরপরও আমি বিষয়টি দেখবো।
কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত