রাসেদুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক ||
আজ রবিবার ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটির ধর্মীয় গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগ ও শোক এই দিনটিকে বিশেষভাবে মহিমান্বিত করেছে।হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়।আরবি ‘আশুরা’ শব্দের অর্থ দশম। আর ‘মহররম’ অর্থ সম্মানিত বা পবিত্র। হিজরি ৬১ সনের এই দিনে ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্য এবং অনুসারীরা ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা মুসলমানদের কাছে আশুরাকে যেমন শোকাবহ করেছে, তেমনি অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শিখিয়েছে।সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায় পবিত্র আশুরা।বাংলাদেশে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মতো, যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ দুপুর দেড়টায় রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।আশুরার শোককে ধারণ করে রাজধানীর পুরান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাজিয়া মিছিল বের হবে।বাংলাদেশে মূলত শিয়া মুসলমানদের উদ্যোগে এই মিছিল হয়। তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে তারা তাদের হৃদয়নিংড়ানো শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। অংশগ্রহণকারীদের ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতমে কারবালার শোক যেন আছড়ে পড়ে তাজিয়া মিছিলে।দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। আশুরা জুলুম ও অবিচারের বিপরীতে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস জোগাবে বলে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন। সমাজে সাম্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি পবিত্র আশুরার দিনে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতিও কামনা করেন তিনি।আশুরা উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতারাও বিবৃতি ও বার্তা দিয়েছেন। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নিষ্ঠুর আওয়ামী নেতাদের পৈশাচিক দমন-পীড়ন ছিল এজিদ বাহিনীর সমতুল্য। ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের আত্মদানের চেতনায় দেশে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’এদিকে তাজিয়া মিছিলে দা, ছুরি, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এমন কোনো বস্তু বা আচরণ, যা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, অরাজকতা সৃষ্টি করে বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে, তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দিয়েছে ডিএমপি।
কপিরাইট © ২০২৫ The Dhaka News Bangla । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত